মৌলভীবাজারের চার আসনে বিএনপি’র আধিপত্য, ইসলামী জোট হলে হবে ভোটের লড়াই

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২৫

মৌলভীবাজারের চার আসনে বিএনপি’র আধিপত্য, ইসলামী জোট হলে হবে ভোটের লড়াই

রাজপথ অনলাইন ডেস্ক :::: আওয়ামী লীগের শাসন আমলে প্রবাসী অধ্যুষিত, পর্যটন সমৃদ্ধ মৌলভীবাজার জেলার মানুষ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ বা ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশ ছাড়া হলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে।
ইন্টেরিম সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস কর্তৃক নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার পর চার সংসদীয় আসনে ত্রয়োদশ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

আওয়ামীলীগ বিহীন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত সারাদেশে বিরাজমান।

দেশে রাজনৈতিক সংকট-উৎকণ্ঠা সময়ে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জামাত ছাড়াও মাঠ গোছাতে ব্যস্ত ইসলামী সংগঠন গুলো।

সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মাধ্যমে জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন হলেও গত ১৭ বছর মৌলভীবাজার জেলায় পর্যায় ক্রমে ৩ জন পূর্ণমন্ত্রী পেলেও মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের চারটি আসনে জামায়াত প্রার্থীর নাম প্রায় চূড়ান্ত করলেও বিএনপি এখনো ঘোষণা করেনি।

জামায়াত ইসলামীর আমির ডাক্তার শফিকুর রহমানের বাড়ি এই জেলায় হওয়াতে মাঠে ময়দানে জামায়াত ইসলামী সাংগঠনিকভাবে অনেক সংগঠিত এবং সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে।নির্বাচনে জামায়াত যেকোন উপায়ে তাদের প্রার্থী আমির ডাক্তার শফিকুর রহমানের নির্বাচনী আসন কুলাউড়ায় বিজয়ী করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

এ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল। তিনি সিলেট কেন্দ্রিক রাজনীতি করলে ও এলাকায় তেমন জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন না। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
তিনি ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বাহিরে আত্মগোপনে রয়েছেন। দেশের আলোচিত এই আসনে ডাকসু’র সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক(বহিষ্কৃত) সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনিও কারান্তরীণ রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হন ।
যিনি বিএনপিকে সংগঠিত করেছিলেন। ষষ্ঠ ও অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয়ভাবে অনেক জনপ্রিয় প্রার্থী।

সাংগঠনিক বিরোধ -বিভেদে মনোনয়ন বঞ্চিত হলে অভিমানী শাহীন দলছূট হয়ে রাজনীতিতে বিতর্কিত ।

রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষকে কোনঠাসা করে আওয়ামী লীগ সংগঠনিক ভাবে জেলায় প্রভাব বিস্তার করে। পর্যায়ক্রমে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, বন ও পরিবেশমন্ত্রী এবং সবশেষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও দৃশ্যমান উন্নয়ন না করায় মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ’র সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের হাতে সংগঠিত করা মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে বিভেদ- বিভক্তিতে জড়িয়ে আছে।
বিগত সরকারের দুঃশাসন কালেও মৌলভীবাজার বিএনপি পৃথক ভাবে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে। যার ফলে সুসংগঠিত বিএনপির বিভক্তির ফাটল বড় হতে থাকে। যে কারণে হাই কমান্ড কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দিলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমেনি।
আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি সময়েও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি গৃহ বিবাদে নিমজ্জিত।

ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামী চারটি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও বিএনপি’র প্রার্থীদের নাম সম্ভাব্যতে আটকে আছে।

জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলার নির্বাচনী এলাকাতে ব্যাপক গণসংযোগ ও কর্মসূচি পালন করলেও মাঠ পর্যায়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগ ছাড়া কোন ঘোষণা করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার মতো জনপ্রিয় প্রার্থী বা আধিপত্য তৈরি হয়নি।

জেলার চারটি নির্বাচনী আসনে ফুলতলী পীরের সমর্থক ও সংগঠন আল ইসলাহ এবং কওমি বলয়ের খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম ইসলামী সংগঠন গুলোর অনেক কর্মী সমর্থক রয়েছে। শোনা যাচ্ছে ইসলামী জোট করতে জামায়াত কাজ করছে। যদি সফল হয় তাহলে জেলার একটি আসনে বিজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলার সব আসনে ইতোমধ্যে জামায়াত, খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আলোচনায় রয়েছে এনসিপি গণঅধিকার পরিষদ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।

মৌলভীবাজার-১(বড়লেখা -জুড়ি)

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, শিল্পপতি নাসির উদ্দিন মিঠু, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক সাজু, মরহুম ত্রাণ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরীর কন্যা ব্যারিস্টার জহরত আবিদ চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক ও আওয়ামী দুঃশাসন কালে মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের পাশে ছিলেন নাসির উদ্দিন মিঠু তার মনোনয়ন পাবার সম্ভাবনা আছে।
এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম যিনি ঢাকার শেরেবাংলা থানার সাবেক আমির। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা বদরুল ইসলাম ঘোষণার পর তিনি এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ ও প্রচারণা করছেন। তিনি জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং জেলার সিনিয়র আলেম- বুজুর্গ ।
খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা লোকমান আহমেদ মনোনয়ন প্রচারণায় রয়েছেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী না থাকায় বিএনপি’র প্রার্থীর বিজয়ী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জামায়াতে ইসলামী জনপ্রিয় কোন প্রার্থী ঘোষণা করলে এবং ইসলামী জোট গঠনপূর্বক নির্বাচনে নামলে বিএনপির প্রার্থীর সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
জেলার বড়লেখা এবং জুড়ি উপজেলা জামায়াতের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দুঃশাসন আমলে এই অঞ্চলে জামায়াত ইসলামী রাজপথে প্রতিরোধ, আন্দোলন মোকাবেলা করেছে ।

মৌলভীবাজার-২(কুলাউড়া)
কুলাউড়া উপজেলায় বিএনপি সমর্থকদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই আসনে নির্বাচন করতে ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান অনেক শক্তিশালী করে তোললেও বিএনপি তাঁকে(২০০১) সালে মনোনয়ন না দেয়ায় ফুটবল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। এই আসনে ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন। যদিও তার প্রতিদ্বন্দি এম এম শাহীন নৌকা প্রতীকের বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছিলেন। দুই জনপ্রিয় রাজনীতিক ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিজেদের কর্মী সমর্থকদের কাছে বিতর্কিত করে তোলেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই আসনে নবাব আলী আব্বাস একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। তিনিও একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বিএনপি’র জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে ঢাকায় এবং এলাকায় রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী।এ আসনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শওকতুল ইসলাম শকু উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ পেতে লবিং তদবির চেষ্টা করছেন।তিনিও মনোনয়ন চান।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে’র সভাপতি বিএনপি নেতা অধ্যাপক,ড.সাইফুল আলম চৌধুরী একজন শক্তিমান সংগঠক ও জনপ্রিয় প্রার্থী। প্রবাসে অবস্থান করলেও জুলাই যোদ্ধাদের সাথে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।তিনি প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের প্রিয়ভাজন হিসেবে কুলাউড়ার উন্নয়নে মন্ত্রীকে কুলাউড়া মুখী করেন এবং দৃশ্যমান উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেন। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ড.সাইফুল আলম চৌধুরী নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন।
ইউএসএ প্রবাসী বিএনপি নেতা সৈয়দ জুবায়ের আলী, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি অলিউর রহমান শিপলু, যুক্তরাজ্য বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুল আহাদ, যুবদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবু সাঈদ আহমদ মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন।

এদিকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান নিজেই এ আসনে প্রার্থী হবেন বলে প্রচার রয়েছে।
তিনি অতীতেও এই আসনে প্রার্থী ছিলেন।
বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ ছাড়া এই আসনে ফুলতলীর পীর সাহেবের সংগঠন আল ইসলাহ’র ভোট ব্যাংক রয়েছে। আনজুমানে আল-ইসলাহ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাজী ফজলুল হক খান সাহেদ প্রার্থী হবার আলোচনা শোনা যাচ্ছে।

প্রাচীন ইসলামী সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাবেক জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মাসুকুর রশীদ এই আসনে দলের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশী। ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় অনেকগুলো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ঘোষণা দিয়েছেন। ছাত্র জমিয়তের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ইউরোপ কমিটির সহকারি মহাসচিব হিসেবে নির্বাচনী মাঠে অনেক প্রচারণা করে ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। বয়সে তরুণ এবং সুবক্তা শাহ মাসুকুর রশীদ একজন কর্মী বান্ধব সংগঠক। জমিয়তকে শক্তিশালী করতে দেশে-বিদেশে সক্রিয় ভুমিকা রাখছেন।

সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধূরী নাদেল দেশান্তরী,সুলতান মোহাম্মদ মনসুর কারান্তরীণ এবং এম এম শাহীন রাজনীতির মাঠের বাইরে (প্রবাসে)থাকলে নির্বাচনে নতুন মুখ প্রার্থীদের মধ্যেই বহুমুখী লড়াই হবে ।

মৌলভীবাজার-৩
(মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর )
মৌলভীবাজার -৩ আসনটি হেভিওয়েট আসন হিসেবে পরিচিত। এই আসন থেকেই বারবার নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী সাইফুর রহমান। স্বাধীনতা পরবর্তী নির্বাচন গুলোতে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হলেও দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি । ১৯৯১ বিএনপি জোট সরকার গঠন করলে এম সাইফুর রহমান টেকনোকেট কৌটায় অর্থমন্ত্রী হন এবং নিজ এলাকাসহ সিলেটে বিভাগে দৃশ্যমান উন্নয়ন বাস্তবায়ন করে মানুষের মন জয় করেন।
১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এম সাইফুর রহমান নিজ আসনসহ একাধিক আসনে নির্বাচিত হন।
২০০১ সালে মৌলভীবাজার-৩ নির্বাচনী আসনটি তার জ্যেষ্ঠ পুত্র এম নাসের রহমানকে ছেড়ে দেন।
উপ নির্বাচনে এম নাসের রহমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেন এবং জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এই আসনে তাঁকে দলের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনা রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমান তার নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের নিকট তার মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানান ।
দীর্ঘ সময়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও ভোটারদের কাছে অপরিচিত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচনী মাঠে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীন।
তবে এই আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান (ভিপি মিজান) মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। নির্বাচনের মনোনয়ন দাবি নিয়েই বিএনপির গৃহবিবাদের কারণ বলে অনেকে মনে করেন।মৌলভীবাজার-৩ আসনে মরহুম আল্লামা ফুলতলী পীরের সংগঠন আল ইসলাহ’র কোন প্রার্থী আলোচনায় না থাকলেও মরহুম সাইফুর রহমানের সাথে ফুলতলী পীরের সাহেবের ভালো সম্পর্ক থাকায় বিএনপি’র প্রার্থীই তাদের সমর্থন পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এ আসনে হেফাজতে ইসলামের কোন প্রার্থীর নাম এখনো শোনা যায়নি তবে বরুণার পীর সাহেবের অনেক কর্মী সমর্থক রয়েছেন।
কওমী ঘরানার রাজনৈতিক সংগঠনগুলো বিভিন্নভাবে বিভক্ত ।ধর্মীয় আদর্শিক ভাবধারায় ঐক্যমত থাকলেও জেলা চারটি আসনে পৃথক সংগঠনে উনাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ বেলাল প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এবং প্রচারণায় রয়েছেন।

মৌলভীবাজার-৪
(শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত অঞ্চল চা বাগান ঘেরা মুসলিম, সনাতন ও নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জনপদ হিসেবে স্বীকৃত।
চা জনগোষ্ঠীর ভোটারদের আধিপত্য থাকায় এবং নৌকা প্রতীকে তাদের আকর্ষণ থাকায় এই আসন থেকে ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ।গত সরকারের আমলে কৃষিমন্ত্রী নির্বাচিত হন বর্তমানে তিনি কারান্তরীণ। মৌলভীবাজার ৪ আসন পতিত আ’লীগের নিজস্ব আসন হিসেবে দাবি করা হতো।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজি মুজিব) রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন। তিনি অতিতেও দলের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এই আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু মনোনয়ন প্রত্যাশী।

নির্বাচনে চা-শ্রমিক ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভোটারদের ভোট ব্যাংক জয় পরাজয় নির্ভর করে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাজী মুজিব ও মহসিন মিয়ার মধ্যকার রাজনৈতিক বিরোধ চা জনগোষ্ঠীর সমর্থন টানতে বেগ পেতে হবে।

এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাড. মোহাম্মদ আব্দুর রব একজন শক্তিশালী প্রার্থী।
(এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী নুরে আলম হামিদী । বরুণার পীর সাহেবের বংশধর হিসেবে নুরে আলম হামিদীর ভালো সমর্থক রয়েছে।তবে ইসলামী জোট গঠনে সফল হলে এই আসনে বিএনপির প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ইসলামী জোট।