দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী মঙ্গলবার: সিলেটে প্রথমবারের মতো হবে কুমারী পূজা

প্রকাশিত: ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫

দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী মঙ্গলবার: সিলেটে প্রথমবারের মতো হবে কুমারী পূজা

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পঞ্চমীতে বোধন এবং ষষ্ঠী তিথিতে আমন্ত্রণ-অধিবাস ও ষষ্ঠীবিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এ দুর্গোৎসব। মঙ্গলবার মহাঅষ্টমী পূজা। মহাঅষ্টমীতে মঙ্গলবার সিলেটে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা।

হিন্দু ধর্মের ৫১ পীঠের অন্যতম মহাপীঠ সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার জৈনপুরে অবস্থিত শ্রীশ্রী মহালক্ষ্মী ভৈরবী গ্রীবা মহাপীঠে দিন সকাল সাড়ে ১০টায় এই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারী পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, ভোগারতি দর্শন, মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় আরতি ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাত ৯টায় শুরু হবে।

ষষ্ঠী থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও সোমবার থেকেই মূল পূজা শুরু হয়। মূলত, এই তিথি থেকেই দেবীর অন্নভোগ শুরু হয়। সেই সঙ্গে সোমবার জাগ্রত হন দেবী দুর্গা। দশহাতে দমন করবেন সব অমঙ্গল আর অশুভকে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। মন্ত্রোচ্চারণ, ধূপ ও আরতির মধ্য দিয়ে চলে মহামায়ার বন্দনা।

এবার দেবী দুর্গা এসেছেন গজ বা হাতিতে চড়ে । হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, এর অর্থ পৃথিবী ভরে উঠবে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধিতে। তবে দেবী দুর্গা বিদায় নেবেন দোলায় বা পালকিতে করে। যার অর্থ- পৃথিবীতে মহামারি, মড়ক, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ কিংবা অতিমৃত্যুর আশঙ্কা।

মহাসপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্থাপন করা হয়। ‘নবপত্রিকা’ শব্দের অর্থ হলো নয়টি ভিন্ন গাছের পাতা। এগুলো হলো— কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মান এবং ধান। এসব উদ্ভিদকে পাতাসহ একটি কলাগাছের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এরপর এক জোড়া বেলপাতা ও শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি পরিয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর মতো সাজানো হয়। পরে তাতে সিঁদুর পরিয়ে দেবী প্রতিমার ডান পাশে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিতভাবে এই নবপত্রিকাই পরিচিত ‘কলাবউ’ নামে।

নবপত্রিকার নয়টি উদ্ভিদকে দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ রূপের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর অনুষ্ঠিত হয় দেবীর মহাস্নান। এ সময় দুর্গা প্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রাখা হয়। সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন উপাচারে দেবীকে স্নান করানো হয়।

শনিবার বোধন শেষে দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাঅষ্টমী’ ও ‘মহানবমী’ পূজা শেষে ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘মহাদশমী’ পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। এরপর সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলা বা পালকিতে চড়ে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ